বিশ্বকাপের ফাইনাল হলো ফাইনালের মতো। যেখানে ম্যাচের শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তার পরও শিরোপা জিতল লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। লুসাইলে অতিরিক্ত সময়ের খেলা ৩-৩ গোলে সমতায় থাকার পর টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলো লে আল্বিসেলেস্তেরা। এই জয়ের ফলে দীর্ঘ ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে শিরোপা জিতল লিওনেল স্কালোনির দল।
এর আগে লুসাইল স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধটা আর্জেন্টিনার হলেও দ্বিতীয়ার্ধটা কিলিয়ান এমবাপ্পের। ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা আর্জেন্টিনাকে দুই মিনিটের ম্যাজিকে সমতায় ফেরান এমবাপ্পে। হাড্ডাহাডি লড়াইয়ে ফাইনাল গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। আজ বিশ্বকাপের ২২তম আসরে প্রথমার্ধে লিওনেল মেসি ও অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার গোলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ২৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে দেন মেসি। এরপর ৩৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ডি মারিয়া।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় নাটকীয় মোড় আসে কিলিয়ান এমবাপ্পের ম্যাজিকে। দুই মিনিটে দুই গোল করে সমতায় ফেরান ফ্রান্সকে। এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। মেসিদের গতিময় আক্রমণ সামলাতে খাবি খাচ্ছিল ফ্রান্সের রক্ষণ। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে ফ্রান্সের ডি বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি ও আলভারেজ। তবে বিপদ ঘটতে দেননি হুগো লরিস। পাঁচ মিনিটের মাথায় বাঁ প্রান্ত থেকে দূরপাল্লার শট নেন ম্যাক অ্যালিস্টার।
অষ্টম মিনিটে ডি পলের শট ভারানের পায়ে লেগে মাঠের বাইরে চলে যায়। নবম মিনিটে আর্জেন্টিনার একটি আক্রমণ থেকে জটলায় গোলের সুযোগ সৃষ্টি হয়। আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে রোমেরোর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে লুটিয়ে পড়েন গোলরক্ষক হুগো লরিস। ১৩ মিনিটে বলার মতন প্রথম একটি আক্রমণ করে ফ্রান্স। তবে রক্ষণভাগের তৎপরতায় বিপদমুক্ত হয় আলবিসেলেস্তেরা।
১৬ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে দারুণ আক্রমণ সাজায় আর্জেন্টিনা। ডি পলের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় দি বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। তবে ডি পলের পাসটি ধরতে পারেননি তিনি। বল পেয়ে যান ডি মারিয়া। তবে তার শট চলে যায় গোলবারের অনেক ওপর দিয়ে। ১৮ মিনিটে ডি বক্সের কাছে বা প্রান্তে ফ্রি কিক পায় ফ্রান্স। ফ্রি কিক থেকে জিরুদের হেড অল্পের জন্য বার উঁচিয়ে চলে যায়।
ম্যাচের ২৩ মিনিটে বল নিয়ে ডিবক্সে ঢুকে পড়ার সময় দি মারিয়াকে বাঁধা দেন থিও হার্নান্দেজ। ডি মারিয়া পড়ে গেলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন মেসি। পঞ্চম বিশ্বকাপে এটি মেসির ১২তম গোল। এই গোলে তিনি পেলেকে ছুঁয়ে ফেললেন। এদিন আর্জেন্টিনার আক্রমণের সামনে দাঁড়াতেই পারছিল না ফ্রান্স। ৩৬ মিনিটে ফ্রান্সের রক্ষণভাগ থেকে বল পেয়ে কাউন্টার অ্যাটকে ওঠে আর্জেন্টিনা। বল নিয়ে ডিবক্সে ঢুকে পড়া মেসি পাস দেন ডি মারিয়াকে। বল পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ফিনিশিং দেন ডি মারিয়া।
দ্বিতীয়ার্ধেও দুর্দান্ত আর্জেন্টিনা। তব এই অর্ধে কিছুটা ছন্দ খুঁজে পায় ফ্রান্সও। তবে বলার মতো কোন আক্রমণ করতে পারেনি তারা। ৪৯ মিনিটে ডি বক্সের ডানপপ্রান্ত থেকে ডি পলকে ক্রস দেন মেসি। ডি পলের দুর্দান্ত ভলি অবশ্য সহজেই লুফে নেন লরিস। ৫১ মিনিটে কর্নার পায় ফ্রান্স। কর্নার থেকে আসা বল দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নেন মার্টিনেজ।
৫৮ মিনিটে আলভারেজের শট ঠেকিয়ে দেন লরিস। ৬০ মিনিটে ম্যাজিক দেখান ডি মারিয়া। ডানপ্রান্ত দিয়ে ঢুকে পড়েন বক্সে। পাস বাড়ান মেসিকে। ৩ জন ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে নেওয়া মেসির শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৬২ মিনিটে মেসি-ম্যাক অ্যালিস্টার দারুণ বোঝাপড়ায় ফ্রান্সের বিপদসীমায় ঢুকে পড়ে। অবশ্য মেসির বাড়ানো বলে পা লাগাতে পারেননি ম্যাক অ্যালিস্টার। এ সময় বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করে দুদল। ডি মারিইয়ার বদলে নামেন আকুনিয়া। দেশম গ্রিজম্যান ও থিও হার্নান্দেজকে তুলে ক্যোমান ও কামাভিঙ্গাকে নামান। এরপর বদলে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট।
৮০ মিনিটে কোলো মুয়ানিকে ডিবক্সে ফেলে দেন ওতামেন্ডি। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পটকিক থেকে গোল করে ব্যবধান কমান এমবাপ্পে। এর এক মিনিট পর ফের এমবাপ্পে ম্যাজিক। বা প্রান্ত থেকে সতীর্থের বাড়ানো বল পেয়ে কোনাকুনি শট নেন এমবাপ্পে। বল জালে জড়িয়ে পড়তেই উল্লাসে মেতে ওঠে ফরাসিরা। এই গোলে বিশ্বকাপ ফাইনালে গোলের বিশ্বরেকর্ড গড়েন তিনি। দুই ফাইনাল মিলিয়ে ৪ গোল করলেন এমবাপ্পে।
Sotto TV We Publish technology, various types of tips, career tips, banking information, methods of earning online