বন্যার্তদের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) জমা পড়েছে মাটির ও প্লাস্টিকের ব্যাংক ও নারিকেলের মালইয়ের ব্যাংক। সবাই যার যার জায়গা থেকে বাড়িয়েছেন সহযোগিতার হাত। সহযোগিতা করতে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই আসছেন টিএসসিতে। শিশুরা এসেছে তাদের জমানো বিভিন্ন ব্যাংক নিয়ে। এছাড়া, কেউ কেউ ট্রাকে করে পাঠাচ্ছেন বিশুদ্ধ খাবার পানিসহ বিভিন্ন সামগ্রী।
সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে টিএসসি ঘুরে দেখা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘গণত্রাণ’ গ্রহণ কেন্দ্রের সামনে কিছু সময় পরপরই আসছেন মানুষ। কেউ নগদ অর্থ, কেউ মাটির কিংবা প্লাস্টিকের ব্যাংক জমা দিয়ে যাচ্ছেন বন্যার্তদের জন্য।
ছোট ছোট পিকআপে করে আসছে বিশুদ্ধ পানি। কিছু সময় পরপরই জটলা বেঁধে যাচ্ছে বুথের সামনে। জটলা সামাল দিতে মাঝে মাঝে স্বেচ্ছাসেবকরা হিমশিম খাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, টানা ভারী বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। বন্যার পানিতে লাখ লাখ মানুষের বাড়িঘর, ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। সেসব এলাকায় দেখা হয়েছে মানবিক বিপর্যয়।
এমন পরিস্থিতিতে টিএসসিতে গত ২২ আগস্ট থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘গণত্রাণ’ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। গত চার দিনে অনলাইন-অফলাইন মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মোট পাঁচ কোটি ২৩ লাখ তিন হাজার ৬০৩ টাকা ৬৮ পয়সা সংগ্রহ করা হয়েছে। এখান থেকে বিভিন্ন খাতে মোট ব্যয় করা হয়েছে ৩০ লাখ ১২ হাজার ৯৭০ টাকা।
ব্যয় করা অর্থ ত্রাণসামগ্রী, জরুরি ওষুধ, ত্রাণসামগ্রী রাখার ব্যাগ এবং স্বেচ্ছাসেবকদের খাবার ক্রয় করতে ব্যয় হয়। তার মধ্যে খেজুর বাবদ ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ৯০০ টাকা, মুড়ি বাবদ ৪ লাখ ৩০০ টাকা, বিস্কুট বাবদ ২ লাখ এক হাজার ৫০ টাকা, গুড় বাবদ ২ লাখ ৫২ হাজার ৮৪০ টাকা, ভলান্টিয়ারদের রাত ও দুপুরের খাবার ৩৯ হাজার টাকা, পলিথিন এক লাখ দুই হাজার ৫০০ টাকা, বস্তা এক লাখ ৭৯ হাজার টাকা, চিনি আড়াই লাখ টাকা, রিকশা ও ভ্যান ভাড়া ৬৫০ টাকা এবং দড়ি, কলম ও কার্টার বাবদ ৭৩০ টাকা ব্যয় হয়। এছাড়া, গাড়ির সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক আট হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
গণত্রাণ কর্মসূচিতে পাওয়া অর্থ-সামগ্রী বিভিন্ন জেলায় সশরীরে এবং প্রশাসনের সাহায্যে বিতরণ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
গতকাল রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট ৫০ ট্রাক ভর্তি ৫০ হাজারের অধিক ত্রাণসামগ্রী বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। প্রতি ট্রাকে ৮০০-১০০০টি রিলিফ প্যাকেজ (এক পরিবার) এবং ২০-৩০ কেস পানি দিয়ে পরিপূর্ণ করা হয়। প্রতিটি প্যাকেজ একটি পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার এবং ওষুধের প্যাকেজ তৈরি করা হয়। তাছাড়া, বিমান বাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে তিন হাজার প্যাকেজ হেলিকপ্টারযোগে বন্যাকবলিত দুর্গম অঞ্চলগুলোতে বণ্টন করা হয়েছে। এছাড়া, তিন লাখ ৯৬ হাজার টাকা নগদ সহায়তা দেওয়া হয়।
Sotto TV We Publish technology, various types of tips, career tips, banking information, methods of earning online