আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোল বাতিল করা উচিত ছিল:ফরাসি গণমাধ্যম

গতকাল আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্সের ফাইনালের ১০৮ মিনিট। দুরন্ত আক্রমণে গোল দিলেন মেসি। লাউতারো মার্টিনেজের শট দারুণ ভাবে বাঁচিয়ে দিলেও শেষ রক্ষা করতে পারলেন না লরিস। ফিরতি বল মেসির হাঁটুতে লেগে জালে ঢুকে গেলো বল। ফ্রান্স অফসাইডের আবেদন করেছিল। কিন্তু ভার-এর চিত্রে দেখা গেল, ফ্রান্সের ডিফেন্ডার কিছুটা ভেতরে ঢুকে ছিলেন। ফলে গোল বহাল।

তবে ফরাসি মিডিয়ার দাবি ওই গোলটি বাতিল করা উচিত ছিল। কারণ কী? গোলের আগেই নাকি আবেগী হয়ে মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন বেঞ্চের দুই খেলোয়াড়! ফরাসি গণমাধ্যম এল একুইপের দাবি, ‘অতিরিক্ত আবেগী হয়ে গোলের আগে মাঠে ঢুকে পড়েন দুই আর্জেন্টাইন ফুটবলার। নিয়ম অনুযায়ী গোলটি বাতিল হওয়ার কথা।’

এদিকে ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, কোনও গোল হওয়ার পর রেফারি যদি লক্ষ্য করেন গোলের আগেই অতিরিক্ত খেলোয়াড় মাঠে তাহলে গোল বাতিল করে পুনরায় খেলা শুরু করতে হবে। অতিরিক্ত খেলোয়াড় মাঠের যেখানে ছিলেন সেখান থেকে ফ্রি-কিকের মাধ্যমে খেলা শুরু হবে।

এদিকে গোলটি ভারে চেক হলেও অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের মাঠে ঢোকার বিষয়টি চেক করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে পারেনি এল একুইপ।

কাতারে মেসির গায়ে আরব ঐতিহ্যের পোশাক নিয়ে সমালোচনা

এবার মেসিদের বিশ্বজয়ের আনন্দের ফ্রেমটা কি কিছুটা ফিকে করে দিল কাতার? কেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে শুধু প্রিয় জার্সি গায়ে ট্রফি তুলতে দেওয়া হল না? কেন তার গায়ে চাপিয়ে দেওয়া হল কাতারের প্রথাগত পোশাক। কালো রংয়ের বিশত (কাতারের পুরুষদের বিশেষ পোশাক) পরতে কেন বাধ্য করা হল মেসিকে? এ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা বিশ্ব ফুটবলে। কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে মেসির হাতে ট্রফি তুলে দেওয়ার আগ মুহূর্তে তাকে ঐতিহ্যবাহী আরবি পোষাক ‘বিশত’ পরিয়ে দেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।

এদিকে সৌদি সংবাদ মাধ্যম আরব নিউজ জানায়, ‘বিশত’ বা ‘আবায়া’ আরব অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী পোশাক যা উঁচু সম্মান-মর্যাদা ও আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন আরব ও মুসলিম দেশে বিশেষভাবে স্মরণীয় মুহূর্তগুলোতে তা পরা হয়। এই অঞ্চলের রাজপরিবারের সদস্য, রাজনীতিবিদ, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা তা পরে আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন। তা ছাড়া কাউকে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদানের অংশ হিসেবে তা পরিয়ে দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। মেসির ঐতিহাসিক ট্রফি জয়ে তাকে তা পরিয়ে দিয়ে সর্বোচ্চ সম্মাননা জানান কাতারের আমির।

ঢিলেঢালা লম্বা পোশাকটি সাধারণত কালো রঙের হয়ে থাকে। তবে এর সাদা, সোনালীসহ বিভিন্ন রঙ রয়েছে। সাধারণত তা নানা ধরনের উল থেকে তৈরি করা হয়। উট বা লামার চুল বা ছাগল বা ভেড়ার উল ব্যবহার করে হাতে সেলাই করা হয়। হস্তশিল্পের এই ধারা বংশপরম্পরায় ধরে রেখেছেন স্থানীয়রা। মূল্যবান উলের তারতম্যে পোশাকটির দামেও তারতম্য হয়ে থাকে। এর হাতা ও কলারে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন এমব্রয়ডারি, যার সেলাইয়ে রয়েছে খাঁটি সোনা ও রূপার প্রলেপ। এ ধরনের পোশাকের দাম প্রায় চার শত মার্কিন ডলার থেকে কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত।

ব্রিটিশ সাংবাদিক ও লেখক সারাহ জোসেফ এক টুইট বার্তায় জানান, ‘যারা জানেন না তাদের জন্য, মেসিকে ‘বিশত’ নামের কালো পোশাকটি সর্বোচ্চ মর্যাদা ও আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে পরানো হয়েছে। হাজার বছরের বেশি সময় ধরে আরব বিশ্বে এই ঐতিহ্য চালু রয়েছে। এর মাধ্যমে তাকে সত্যিকার কিংবদন্তি হিসেবে সম্মাননা জানানো হয়েছে।’

ইসলামের ইতিহাসের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ মারুফ এক টুইট বার্তায় জানান, ‘কাতারের সংস্কৃতি হলো, ‘বিশত’ পোশাক পরানোর মাধ্যমে কারো প্রতি সর্বোচ্চ সম্মাননা জানানো। তাই কাতার আমির মেসিকে ‘বিশত’ পোশাক পরিয়ে সর্বোচ্চ সম্মাননা জানান। (এই বিষয়ে) অজ্ঞ পশ্চিমা মিডিয়ার (অপপ্রচার না করে) ঘেনঘেনানি না করে এই বিষয়ে আরো জানা উচিত।’

সাবেক ফুটবলারদের একটা অংশও মেসির গায়ে বিশত নিয়ে ক্ষুব্ধ। প্রাক্তন ইংরেজ ফুটবলার গ্যারি লিনেকার যেমন বলছেন, ‘এটা লজ্জাজনক। একদিক থেকে ওরা মেসির আর্জেন্টিনার জার্সিটাই ঢেকে দিল। ’ আর্জেন্টিনার সাবেক ডিফেন্ডার পাওলো জাবালেতাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, ‘এটা কেন করা হবে? কেন? এটার তো কারণ থাকতে পারে না।’ ফুটবল সমর্থকদের একটা বড় অংশও এই কালো জোব্বা পরানোতে অসন্তুষ্ট। তবে মেসিকে সর্বোচ্চ সম্মান জানাতেই এই কালো বিশত পরিয়েছিলেন কাতারের আমির।

Check Also

Health for Life Nutrition A Guide to Living Well

Health for Life Nutrition A Guide to Living Well

In today’s fast-paced world, maintaining good health can seem overwhelming. But the truth is, a …