তিন পাত্তি গোল্ডসহ বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে অন্তত ২০০ কোটি টাকা ভারতে পাঠিয়েছেন উল্কা গেমস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জামিলুর রশিদ। সোমবার (৩১ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে জামিলুর রশিদ একটি ভারতীয় কোম্পানি মুনফ্রগ ল্যাবের সাথে যোগাযোগ করেন। এরপর ২০১৮ সালে ওই সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে দেড় লাখ টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন। মুনফ্রগ ল্যাবের অনলাইন জুয়া অ্যাপ ‘তিন পাত্তি গোল্ড’- এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় গেমটিকে আরও ছড়িয়ে দিতে দেশে বৈধতা দেওয়ার জন্য কতিপয় আইনজীবীর পরামর্শে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ২০১৯ সালের প্রথম দিকে ‘উল্কা গেমস প্রা. লি.’ নামে একটি গেমিং ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নেন জামিলুর রশিদ।
২০১৯ সালে মুনফ্রগ দেশের গেমিং সেক্টরের উন্নয়নের জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা দিয়ে উলকা গেমের ০.০১ শতাংশ প্রদানের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। দেশে গেম ডেভেলপমেন্টের অনুমোদন থাকলেও অনলাইন জুয়া/ক্যাসিনোর অনুমোদন না থাকায় উল্কা গেমস বিভিন্ন ভুল তথ্য উপস্থাপন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে আইনি বৈধতা প্রাপ্তির ব্যবস্থা করে। এভাবেই ‘তিন পাত্তি গোল্ড’ যাত্রা শুরু করে।
মূলত একটি অ্যাপ যা মোবাইলে ডাউনলোড করে খেলা যায়। এই অ্যাপের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ মুনফ্রগ ল্যাবের কাছে রয়েছে। এই অ্যাপে ‘তিন পাত্তি গোল্ড’ ছাড়াও ‘রাখি’, ‘অন্দর বাহার’ ও ‘পোকার’ নামেও অনলাইন জুয়ার গেমস রয়েছে। যে কোনো কাজের পাশাপাশি এই গেম খেলতে পারায় তরুণসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে এটি জনপ্রিয়তা পায়। গেমের রেজিস্ট্রেশনের পর একজন গ্রাহককে গেমস খেলার জন্য কিছু চিপস ফ্রি দেওয়া হয়। পরে গেমস খেলার জন্য অর্থের বিনিময়ে চিপস কিনতে হয়। মূলত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে চিপস কিনে অর্থের লেনদেন হয়।
তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার চিপ বিক্রি হয় এবং প্রতিটি কোটি টাকার চিপ বিক্রি হয় বিভিন্ন পর্যায়ে ৪৬ থেকে ৬৫ টাকায়। বিভিন্ন বট প্লেয়ার/রোবট প্লেয়ারের মাধ্যমে মূল গেইমারদের কৌশলে হারিয়ে প্লেয়ারদের পরে আরও চিপস কিনতে উৎসাহিত করা হয়। বাংলাদেশে ‘তিন পাত্তি গোল্ড’ এর চিপস বিক্রির কাজটি ১৪টি অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর/এজেন্টের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। এই সকল ডিস্ট্রিবিউটরদের সাব ডিস্ট্রিবিউটরও রয়েছে। গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাবের কর্মকর্তা।
রিজেন্ট হাসপাতালের সাহেদের জামিন স্থগিত থাকবে
অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. শাহেদকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি) শুনবে আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে হাইকোর্টের জামিনের ওপর চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ চলমান রাখা হয়েছে। সোমবার (৩১ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। সাহেদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর এ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ আদালত।
মামলায় সাহেদকে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(ক) ধারায় যাবজ্জীবন ও (চ) ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দুটি সাজা একত্রে চলবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ওই অস্ত্র বাজেয়াপ্ত ও যে গাড়ি থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে, তার মালিকানা যাচাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
পরে হাইকোর্টে আপিল করে জামিন চেয়েছেন সাহেদ। ৭ জুন তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদেনে ১২ জুন তা স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। ২০২০ সালের ১৫ জুলাই সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সাহেদকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এরপর তাকে নিয়ে উত্তরায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করে সংস্থাটি। পরে উত্তরা পশ্চিম থানায় র্যাব অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করে।
একই বছরের ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম ধরা পড়ে। পরদিন ৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।
Sotto TV We Publish technology, various types of tips, career tips, banking information, methods of earning online