দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদকে বহিষ্কারের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি। শনিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় প্রেসিডিয়াম বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেষবারের মতো রওশন এরশাদ ঘোষিত আগামী ২৬ নভেম্বর পার্টি কাউন্সিল বাতিল করার জন্য তাকে অনুরোধ করা হবে। তিনি (রওশন এরশাদ) যদি কাউন্সিলে অনড় থাকেন তাহলে তাকে পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হবে। আর রওশন এরশাদের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের ভাগিনা পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আদেলুর রহমান আদেল এমপিকে। রওশন এরশাদ যদি ফোন না ধরেন সেক্ষেত্রে তার সন্তান সাদ এরশাদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে বৈঠক সূত্র থেকে জানা গেছে।
বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, কিছুদিন আগে অব্যাহতি পাওয়া বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙাকে সাধারণ সদস্য পদ থেকেও স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আমি ম্যাডামকে (রওশন এরশাদ) কিছুদিন আগে মোবাইলে বলেছিলাম, আপনি আমাদের মাতৃ সমতূল্য। আমি সবসময় আপনার সঙ্গে ছিলাম। আপনি কাউন্সিল প্রত্যাহার করুন। তিনি আমাকে ভালো-মন্দ কিছু বলেননি। এরপর একাধিকবার ফোন করলেও ফোন ধরেননি। তিনি আরও বলেন, সিস্টেমের বাইরে যেই কাজ করবে, পার্টির বিরুদ্ধে বিভেদ সৃষ্টি করবে সে আমার আপন ভাই হলেও তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সভায় উপস্থিত বৃহত্তর ঢাকার এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, দলের ভেতরে থেকে দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করা সহজ। আর যদি আগে থেকে চিহ্নিত ষড়যন্ত্রকারীদের দল থেকে বের করে দেয়া হয়, তাহলে তারা পার্টির তেমন ক্ষতি করতে পারবে না। অপর এক প্রেসিডিয়াম ও দলীয় সংসদ সদস্য বলেন, আমার কাছে ম্যাসেজ আছে সাদ এরশাদ ম্যাডামকে জিম্মি করে রেখেছেন। ঢাকায় অবস্থানরত পার্টি থেকে বহিষ্কৃত কয়েকজনের সমম্বয়ে সাদ ম্যাডামের মোবাইল সিজ করে রেখেছেন। তাদের আস্থাভাজন ছাড়া কাউকে রওশন এরশাদের সঙ্গে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না।
সাবেক মহাসচিব ও বর্তমানের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার বলেন, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতার বিষয়ে উনারা (সংসদ সদস্য) সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরই সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হবেন।
বৈঠকে জাপার চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের তার বক্তব্যে বলেন, পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না, সে যত বড় বা শক্তিশালী হোক না কেনো। দলের মাঝে শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমি যেকোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নেব।
বেলা ১১টায় শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রেসিডিয়ামের ৪১ সদস্যের মধ্যে ৩৮ জন এবং ২৬ এমপির মধ্যে ২০ জন উপস্থিত ছিলেন।
Sotto TV We Publish technology, various types of tips, career tips, banking information, methods of earning online