মেক্সিকোর বিপক্ষে একাধিক পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা

চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের সঙ্গে হেরেছে আর্জেন্টিনা। প্রচণ্ড হতাশা তাঁদের চোখেমুখে। কোচ স্কালোনি, ডি মারিয়া, ডিফেন্ডার রোমেরো- সবার প্রতি যেন রাগ তাঁদের। তবে দলের প্রতি সহানুভূতিটা এখনও যায়নি। কাতারে আসার পর প্রতিদিনই কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে একবার করে ঢুঁ মারেন তাঁরা। তবে গতকাল ওমুখো হননি কেউ। হওয়ার সুযোগও ছিল না।

আর্জেন্টিনার মিডিয়া ম্যানেজার নাকি তাঁদের সবাইকে টেক্সট করে জানিয়ে দিয়েছেন, মেসিদের অনুশীলন সেশনগুলো এখন থেকে ‘ক্লোজড ডোর’ হবে। সেখানে কোনো ক্যামেরার চোখ থাক, সেটা চান না কোচ স্কোলানি। গতকাল অনুশীলন ছিল বিকেলে, কিন্তু স্কালোনি জরুরি নোটিশে সেটা এগিয়ে নিয়ে আসেন সকাল ১১টায়। ঠা ঠা রোদে কঠোর অনুশীলন করান দলকে।

কাতারের গরমে যেন কাহিল না হয়ে পড়েন, সে জন্য এই ব্যবস্থা। তবে এরই মধ্যে ড্রেসিংরুমের ছিদ্র থেকে মেসির স্বদেশিরা জেনে নিয়েছেন, সৌদি আরবের কাছে হারার পর দলের ডিফেন্স নিয়ে একান্তে কথা হয়েছে লিওনেল মেসি আর কোচ স্কালোনির মধ্যে। আর সেখান থেকেই নাকি পরের ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে শুরুর একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন আসছে।

প্রথমেই ঠিক হয়েছে, ডিফেন্ডার ক্রিস্টিয়ান রোমেরোকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হবে। ইংল্যান্ডে প্রিমিয়ার লিগ খেলার সময় টটেনহ্যামের শেষ ম্যাচে নাকি তিনি চোট পেয়েছিলেন। সেদিন সৌদি আরবের বিপক্ষে প্রথম গোলটি খাওয়ার সময় রোমেরোর মুভমেন্টে ভুল ছিল। সেটা তাঁর চোট-পরবর্তী অবস্থার কারণে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে আর্জেন্টিনার মিডিয়া মহলে। রোমেরোর জায়গায় লিসান্দ্রো মার্টিনেজকে খেলানোর জন্য নাকি আর্জেন্টিনায় রীতিমতো গণদাবি উঠেছে।

এদিকে রক্ষণের আরও দুই খেলোয়াড় ন্যুহেল মলিনা আর নিকোলাস ট্যাগলিফিকোকেও বসিয়ে রাখা হবে। সেদিন সৌদির বিপক্ষে যে অনাকাঙ্ক্ষিত হার, তার পর পোস্টমর্টেমে এই তিন খেলোয়াড়ের ছন্দপতনই সামনে এসেছে বেশি। তবে সেই রিপোর্টে বিশ্বাসটা টলে যাওয়ার কোনো খবর আসেনি। পরের দুই ম্যাচ জিতলেই যে শেষ ষোলোতে যাওয়া সম্ভব, এটা অন্তত বিশ্বাস করছেন মেসিরা।

স্মরণীয় ম্যাচ খেলে আর্জেন্টিনাকে হারাতে চান মেক্সিকান গোলরক্ষক

চলমান কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা এবং মেক্সিকো, দুই দলের কারোরই শুরুটা আশানুরূপ হয়নি। পোল্যান্ডের সাথে ড্র করেছে মেক্সিকো। অপরদিকে আর্জেন্টিনার অবস্থা আরও শোচনীয়, সৌদি আরবের কাছে হেরেই গেছে আলবেসিলেস্তেরা। বাংলাদেশ সময় আগামী শনিবার দিবাগত রাত ১টায় এবার মেক্সিকোর মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা।

এদিকে দুই দলেরই দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছানোর আশা বাঁচিয়ে রাখতে এই ম্যাচের ফল নিজেদের পক্ষে আসার বিকল্প নেই। আর্জেন্টিনার এই বাঁচা-মরার ম্যাচটি কঠিন করব তুলতে চান মেক্সিকোর ইনফর্ম গোলরক্ষক গিয়ের্মো ওচোয়া। মেসিদের হারিয়ে স্মরণীয় একটি ম্যাচ খেলতে বদ্ধপরিকর এই তারকা গোলরক্ষক।

এক সাক্ষাৎকারে মেক্সিকোর এই গোলরক্ষক জানিয়েছেন, “আর্জেন্টিনার বিপক্ষে আমরা একটি স্মরণীয় ম্যাচ খেলতে চাই। আমরা আমাদের দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে আর্জেন্টিনাকে হারাতে চাই।” দুর্দান্ত ফর্মেও আছেন এই মেক্সিকান গোলরক্ষক। বিশ্বকাপ আসলেই যেন নিজের স্বরূপে আবির্ভুত হন এই তারকা।

সর্বশেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে আরও একবার নিজের অতিমানবীয় পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন তিনি। এদিকে লেভানদোস্কির পেনাল্টি রুখে দেওয়ার পাশাপাশি ম্যাচ জুড়ে নজরকাড়া পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন ওচোয়া। তার এই ফর্ম আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ভালো করার আশা জাগাতেই পারে মেক্সিকো ভক্তদের মনে।

প্রিয় দলের খেলা দেখতে কাতার গেলেন তামিম

আজ রাতে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করবে ব্রাজিল। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হতে যাওয়া ম্যাচটি মাঠে বসে দেখবেন বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এ উদ্দেশে তিনি গতকালই বিমানে উঠেছেন। গত ২১ অক্টোবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্রাজিল-সার্বিয়া ম্যাচের টিকিট পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তামিম।

এদিকে বিশ্বের সব ফুটবল ফেডারেশনকেই অল্প কিছু টিকিট দিয়ে থাকে ফিফা। তেমনি বাফুফে পেয়েছে ২৯০ টিকিট। এই টিকিটগুলো বিক্রি করা হয় স্থানীয় সাবেক-বর্তমান খেলোয়াড়, ক্লাব, পৃষ্ঠপোষক এবং অন্য খেলার খেলোয়াড়দের মধ্যে।

তবে তামিম কোথা থেকে টিকিট পেয়েছেন, তা জানাননি। শুধু তামিমই নন, টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও কাতারে গিয়ে তার প্রিয় দল আর্জেন্টিনার খেলা দেখবেন। আগামী ২৬ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা এবং মেক্সিকো।

ওই ম্যাচটাই মাঠে বসে দেখবেন সাকিব। যদিও তার প্রিয় দল আর্জেন্টিনা নিজেদের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হেরে বিশ্বকাপ শুরু করেছে। মেক্সিকো ম্যাচে তাদেরকে জিততেই হবে।

জরিমানাসহ নিষিদ্ধ হলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো

গত এপ্রিলে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে এভারটনের বিপক্ষে ম্যাচ হেরে যায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সেই ম্যাচ হেরে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি রোনালদো। মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় এভারটনের এক ক্ষুদে ভক্তের মোবাইল আঁচড়ে ভেঙে ফেলেন এই পর্তুগিজ তারকা। সেই ঘটনার ৭ মাস পার হওয়ার পর এমন কাজের জন্য এই ফুটবলার শাস্তির শিকার হলেন।

সদ্য ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে দেওয়া রোনালদো অবশ্য শাস্তি পেলেন রেড ডেভিলের জার্সিতে নিজের কৃতকর্মের জন্যই। সেই ম্যাচে ভক্তের মোবাইল ভাঙায় এই ফুটবলারকে দুই ম্যাচে নিষিদ্ধ করেছে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। সঙ্গে আর্থিক জরিমানাও গুনতে হচ্ছে এই ফুটবলারকে।

এদিকে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে জানায়, ‘এই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা অবশ্য নিজের সেই দোষের বিষয়ে স্বীকার করেছেন। রোনালদোকে দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এছাড়াও তাকে ৫০ হাজার ইউরো জরিমানা করা হচ্ছে। ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের নিয়মভঙ্গ করার জন্য তাকে সতর্ক করা হচ্ছে।’

অবশ্য দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হলেও সেটা রোনালদোর জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামাতে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। আগামীকাল ২৪ নভেম্বর রাত ১০টায় রোনালদোর পর্তুগাল বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ঘানার বিপক্ষে মাঠে নামবে।

যারা মেসি ও আমার বাবার মধ্যে তুলনা করে তারা ফুটবলই বুঝে না: ম্যারাডোনার ছেলে

বর্তমান সময়ে সেরা ফুটবলারদের কাতারে সবার ওপরে থাকবে আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসির নাম। অপরদিকে মেসির আগে এই তালিকায় ছিলেন আর্জেন্টিনার আরেক কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা। দুইজনের মধ্যে সেরা কে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ম্যারাডোনার ছেলেও বলছে একই কথা।

এদিকে দিয়েগো ম্যারাডোনা জুনিয়র বলছেন, যারা মেসির সঙ্গে ম্যারাডোনাকে তুলনা করে তারা আসলেই ফুটবল বুঝে না। ফুটবল দেখেও না তারা। ভিন্ন দুই প্রেক্ষাপট থেকে দুইজনকেই সেরা মানছেন তিনি। এছাড়া গতকাল আর্জেন্টিনার সেই হারে কষ্ট পেয়েছেন বলেও জানান ম্যারাডোনার ছেলে।

কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হারে লিওনেল মেসির দল। আলবেসিলেস্তেদের হয়ে একমাত্র গোলটি করেনই মেসি; পেনাল্টি থেকে। এই নিয়ে পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলছেন তিনি, হতে পারেই এটিই শেষ বিশ্বকাপ। যেখানে শুরুতেই ব্যর্থ হয়েছেন পিএসজির এই ফরোয়ার্ড। অপরদিকে দিয়েগো ম্যারাডোনার নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জিতে আর্জেন্টিনা।

এদিকে ম্যারাডোনার বিশ্বকাপ জেতার কৃতিত্ব থাকলেও মেসির সেটা হয়ে ওঠেনি। অপরদিকে ব্যক্তিগত অর্জনের দিক থেকে মেসি ঢের এগিয়ে। তাইতো ম্যারাডোনা জুনিয়র বলছেন, এই দুইজনের মধ্যকার তুলনা করে যারা, তারা ফুটবল বুঝে না। ইতালির রেডিও মার্তেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘মেসি ও আমার বাবার (ম্যারাডোনা) মধ্যকার তুলনা তারাই করে, যারা ফুটবল বুঝে না। ফুটবল দেখে না। আমরা এখানে ভিন্ন দুইটি গ্রহের কথা বলছি। যদিও আমি সরাসরি মেসির দিকেই আঙুল তুলতে পারি না।’

আর্জেন্টিনা হারায় কষ্ট পেয়েছেন বলেও জানান ম্যারাডোনা জুনিয়র। কখনো কখনো এমন হয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘কিছু সময় ফুটবলে অনেক দুর্বল দলের কাছেও হারতে হয়। আমি মনে হয় না, আর্জেন্টিনা খুব হতাশ ছিল। বরং দলটি ভয় পেয়েছে। ফুটবল এমনই। আপনি যখন খেলা শেষ করতে পারবেন না, অনেক দুর্বল দলও আপনাকে টপকাবে।’

Check Also

Health for Life Nutrition A Guide to Living Well

Health for Life Nutrition A Guide to Living Well

In today’s fast-paced world, maintaining good health can seem overwhelming. But the truth is, a …